“আমি অনার্স ১ম বর্ষের একজন ছাত্রী। আমার বয়স ২০। আমি জানি না যে আমি
কেন আমার কথাগুলো লিখছি। আমি এও জানি না যে এটা আমার কেমন সমস্যা। যাই
হোক,মুল কথায় আসি।
আমার সাথে একটা ছেলের প্রায় সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক। ছেলেটা খুব সৎ। অন্য কোনো মেয়ের প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। কোনো নেশাও করেনা। ওর মত ছেলে খুব কমই আছে। আমাদের সম্পর্কে কোন সমস্যা ছিল না। ভালই চলছিল সব। দেড় বছর আগে ওর বাসায় ঝামেলা শুরু হয়। ওর বাবা মায়ের মাঝে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলেত থাকে। ও আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে সব ঠিক করার। কিন্তু উলটো সব ঝামেলা ওর দিকে আসতে থাকে। ও অনেক ভাল ছাত্র। কিন্তু পারিবারিক এই ঘটনার জন্য ওর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ওর খুব ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা করার,কিন্তু পারে নি। এরপর এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা পৈশাচিক। এমনকি ওর বাবা মা ওকে মেরেও ফেলতে চায়। পরে ও অনেক ভেঙে পড়ে।
ওকে প্রথম থেকেই আমি সাপোর্ট দিয়ে আসছি। এরপর আমার দায়িত্ব আরো বেড়ে
যায়। এক কথায় আমিই ছিলাম ওর চালিকা শক্তি। ও অনেক রাগী। তাই ওকে সামলানো
সহজ ছিল না। কোনোমতে ও বেঁচে থাকে আর কি। শেষে ওকে কোন কারণ ছাড়াই ত্যাজ্য
করা হয়। জিগ্যেস করলে ওর বাবা বলে তার ইচ্ছা তাই সে করছে। ওর মা নীরব
দর্শক হয়ে থাকে। আমার এগুলো লিখতেও কাণ্ণা পাচ্ছে। এমন কোনো কিছু বাদ নেই
যেটা আমরা করি নাই। অনেক চেষ্টার পর এখন সব কিছু কোনোরকম আছে। ও ব্যবসা
করে। আর বাসায় জেদ করে টিকে আছে। ও এখন মানিসক ভাবে অসুস্থ। আমি ওকে জোর
করে মানসিক ডাক্তার দেখাই। ইনশাআল্লাহ ও ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু এতদিন যে
চাপ ওর উপর দিয়ে গেছে তার ভাগ আমিও পেয়েছি। আমার অনেক কিছুই করতে হয়েছিল
ওকে ঠিক রাখার জন্য।
বলতে লজ্জা লাগছে যে আমার বাবাও আর একজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এতে আমার বাসায়ও ঝামেলা শুরু হয়। এমন না যে আমার আর আমার প্রেমিকের পরিবার অগোছালো। আমাদের পরিবার অনেক গোছানো ছিল। আমি আমার বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। তাকে দিয়ে এরকম আশা করিনি। আমার মা এতে ভেঙে পড়ে। বড় সন্তান হওয়ায় মাকে আমারই সামলাতে হয়। আমি প্রতিবাদ করায় আমার বাবা আমাকে অনেক কথা শুনায়, তার মাঝে আমার প্রেমিক নিয়েও কিছু কথা ছিল। আরও বলে তার সাথে যেন আমি আর কথা না বলি। আজ চার মাস হল আমি কথা বলি না। টাকা পয়সা নেই না।
আমার বাবা অনেক ভাল। সে জীবনে অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছে। সে আমার আইডল। কিছু মানুষের প্ররচনায় সে এগুলো করেছে। কিন্তু সে যে ভুল করছে এটা মানতে নারাজ। আমি ভিতরে ভিতরে মরে যাচ্ছি। কিন্তু সবার সাথে ভালো থাকার অভিনয় করি। তারা হয়ত বুঝে কিন্তু বুঝেও লাভ না। আমি কারও কথায় সন্তুষ্ট হতে পারি না। আমার শুধু মনে হয় অনেক হয়েছে। আর পারিনা। আমার কিছু ভাল লাগে না। আমার প্রেমিকের সাথেও খারাপ ব্যবহার করি। পরে কষ্ট হয়। আমি ছাড়া তো ওর কেউ নাই। সে ওর বাবা মাকে দেখতে পারে না,আমি অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু ও বোঝে না,বলে যে আমার জন্যই ও বেঁচে আছে। কিন্তু এটা তো ঠিক না। আমি ক্লাসে যাই না। পড়ালেখা করতে পারছি না। একটুতেই রাগ উঠে যায়। আপনজনদের সাথে মাঝে মাঝে রাগারাগি করি। মনে হয় এত সমস্যা আমার সাথেই কেন। কারও সাথে কষ্টের কথা বলি না। আপনজনকে কীভাবে বলব,তারাই তো কষ্টে আছে। বাইরের কাউকে বললে খারাপ ভাবে নিবে। ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার অবস্থা আমার নেই। আমার শুধু মনে হয় মরলেই সব সমস্যা শেষ।
আমার প্রেমিকের এখন আমাকে অনেক দরকার। আর আমি কিনা ওকে সহ্য করতে পারছি না!! আমি কি খারাপ হয়ে গেছি, আপু? আমি কী করব?”
পরামর্শ:
আপু, খুব কষ্ট হলো আপনার চিঠি পড়ে। কিন্তু খুব নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই যে আপনি খুব ভালো একটি মেয়ে। কুব ভালো এবং খুব সাহসী। এমন একটা মেয়ের কি ভেঙে পড়লে চলে?
হ্যাঁ, আপনার সাথে যা হয়েছে তারপর ভেঙে পড়বে যে কোন মানুষ। আপনি অনেক লড়েছেন, অনেক। এটার পড় ভেঙে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এতকিছু লড়ার পড় যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তখন ভেঙে পড়লে তো চলবে না বোন। আপনি যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে ভেঙে পড়েন নি আপু। আপনি ভেঙে পড়েছেন কারণ আপনার বাবার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে বলে। কিন্তু এই ব্যাপারটি মেনে নিতেই হবে। যে মুহূর্তে আপনি এটা মেনে নিতে পারবেন, আস্তে আস্তে আপনার সাহস ফিরে আসতে শুরু করবে।
আমার কথা শুনে রাগ করবেন না আপু। কিতু বাবাকে যতটা ভালো মানুষ আপনি মনে করছেন, ততটা ভালো তিনি নন। আপনি খুব ভালো মনের একটি মেয়ে, তাই সবাইকেই ভালো মনে করেন। তাই তো প্রেমিকের পিতা এত কিছু করার পরও তাঁদের সম্পর্কে ভালো কথাই বোঝান প্রেমিককে। কিতু আপনার পিতা যা করেছেন, এটা নিতান্তই স্বার্থপরতা। আপনার জন্য এই বয়সে তিনি বিয়ে করতে পারেন নি বলে আপনার সাথে কথা বলাই বন্ধ করেছেন। একটা মানুষ কতটুকু স্বার্থপর হলে এটা হতে পারে। জীবনে কেউ কষ্ট করে বড় হলেই ভালো মানুষ হয়ে যায় না আপু। আপনি যা করেছেন একদম ঠিক কাজ করেছেন। আপনি নিজের মায়ের সংসার বাঁচিয়েছেন। তাতে তো পিতার সাথে আপনার সম্পর্ক স্যাক্রিফাইস করতে হয় তো হোক। অন্তত আপনার মায়ের ঘর তো বেঁচে গিয়েছে, তাই না? ব্যাপারটিকে এভাবেই দেখুন…
আর আপু, আপনি নিজের প্রেমিকের সাথে সব শেয়ার করবেন। আরেকজনের দুঃখের কথা শুনলে নিজের দুঃখও কমে, কারণ মানুষ সহমর্মিতা দেখাবার সুযোগ পায়। আপনারা দুজনেই যেহেতু দুঃখী নিজের পরিবার নিয়ে, পরস্পরের দুঃখ শেয়ার করুন। পরস্পরকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরুন যেন কেউ আপ্নাদে আলাদা করতে না পারে। বড় যুদ্ধগুলো আপনারা করেই ফেলেছেন আপু। শেষপ্রান্তে এসে হাল ছাড়বেন না যেন। আপনি কেন রাগারাগি করে ফেলেন, সেটা প্রেমিককে বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন তিনিই আপনার মনকে সাহস দিয়েছেন।
অনেক শুভকামনা আপনাদের জন্য। যখন আপনারা দুজন মিষ্টি একটা সংসার বুনবেন, আমাদের জানাবেন নিশ্চয়ই। আমরা সেই সুখবরের অপেক্ষায় রইলাম।
আমার সাথে একটা ছেলের প্রায় সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক। ছেলেটা খুব সৎ। অন্য কোনো মেয়ের প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। কোনো নেশাও করেনা। ওর মত ছেলে খুব কমই আছে। আমাদের সম্পর্কে কোন সমস্যা ছিল না। ভালই চলছিল সব। দেড় বছর আগে ওর বাসায় ঝামেলা শুরু হয়। ওর বাবা মায়ের মাঝে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলেত থাকে। ও আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে সব ঠিক করার। কিন্তু উলটো সব ঝামেলা ওর দিকে আসতে থাকে। ও অনেক ভাল ছাত্র। কিন্তু পারিবারিক এই ঘটনার জন্য ওর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ওর খুব ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা করার,কিন্তু পারে নি। এরপর এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা পৈশাচিক। এমনকি ওর বাবা মা ওকে মেরেও ফেলতে চায়। পরে ও অনেক ভেঙে পড়ে।
বলতে লজ্জা লাগছে যে আমার বাবাও আর একজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এতে আমার বাসায়ও ঝামেলা শুরু হয়। এমন না যে আমার আর আমার প্রেমিকের পরিবার অগোছালো। আমাদের পরিবার অনেক গোছানো ছিল। আমি আমার বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। তাকে দিয়ে এরকম আশা করিনি। আমার মা এতে ভেঙে পড়ে। বড় সন্তান হওয়ায় মাকে আমারই সামলাতে হয়। আমি প্রতিবাদ করায় আমার বাবা আমাকে অনেক কথা শুনায়, তার মাঝে আমার প্রেমিক নিয়েও কিছু কথা ছিল। আরও বলে তার সাথে যেন আমি আর কথা না বলি। আজ চার মাস হল আমি কথা বলি না। টাকা পয়সা নেই না।
আমার বাবা অনেক ভাল। সে জীবনে অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছে। সে আমার আইডল। কিছু মানুষের প্ররচনায় সে এগুলো করেছে। কিন্তু সে যে ভুল করছে এটা মানতে নারাজ। আমি ভিতরে ভিতরে মরে যাচ্ছি। কিন্তু সবার সাথে ভালো থাকার অভিনয় করি। তারা হয়ত বুঝে কিন্তু বুঝেও লাভ না। আমি কারও কথায় সন্তুষ্ট হতে পারি না। আমার শুধু মনে হয় অনেক হয়েছে। আর পারিনা। আমার কিছু ভাল লাগে না। আমার প্রেমিকের সাথেও খারাপ ব্যবহার করি। পরে কষ্ট হয়। আমি ছাড়া তো ওর কেউ নাই। সে ওর বাবা মাকে দেখতে পারে না,আমি অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু ও বোঝে না,বলে যে আমার জন্যই ও বেঁচে আছে। কিন্তু এটা তো ঠিক না। আমি ক্লাসে যাই না। পড়ালেখা করতে পারছি না। একটুতেই রাগ উঠে যায়। আপনজনদের সাথে মাঝে মাঝে রাগারাগি করি। মনে হয় এত সমস্যা আমার সাথেই কেন। কারও সাথে কষ্টের কথা বলি না। আপনজনকে কীভাবে বলব,তারাই তো কষ্টে আছে। বাইরের কাউকে বললে খারাপ ভাবে নিবে। ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার অবস্থা আমার নেই। আমার শুধু মনে হয় মরলেই সব সমস্যা শেষ।
আমার প্রেমিকের এখন আমাকে অনেক দরকার। আর আমি কিনা ওকে সহ্য করতে পারছি না!! আমি কি খারাপ হয়ে গেছি, আপু? আমি কী করব?”
পরামর্শ:
আপু, খুব কষ্ট হলো আপনার চিঠি পড়ে। কিন্তু খুব নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই যে আপনি খুব ভালো একটি মেয়ে। কুব ভালো এবং খুব সাহসী। এমন একটা মেয়ের কি ভেঙে পড়লে চলে?
হ্যাঁ, আপনার সাথে যা হয়েছে তারপর ভেঙে পড়বে যে কোন মানুষ। আপনি অনেক লড়েছেন, অনেক। এটার পড় ভেঙে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এতকিছু লড়ার পড় যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তখন ভেঙে পড়লে তো চলবে না বোন। আপনি যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে ভেঙে পড়েন নি আপু। আপনি ভেঙে পড়েছেন কারণ আপনার বাবার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে বলে। কিন্তু এই ব্যাপারটি মেনে নিতেই হবে। যে মুহূর্তে আপনি এটা মেনে নিতে পারবেন, আস্তে আস্তে আপনার সাহস ফিরে আসতে শুরু করবে।
আমার কথা শুনে রাগ করবেন না আপু। কিতু বাবাকে যতটা ভালো মানুষ আপনি মনে করছেন, ততটা ভালো তিনি নন। আপনি খুব ভালো মনের একটি মেয়ে, তাই সবাইকেই ভালো মনে করেন। তাই তো প্রেমিকের পিতা এত কিছু করার পরও তাঁদের সম্পর্কে ভালো কথাই বোঝান প্রেমিককে। কিতু আপনার পিতা যা করেছেন, এটা নিতান্তই স্বার্থপরতা। আপনার জন্য এই বয়সে তিনি বিয়ে করতে পারেন নি বলে আপনার সাথে কথা বলাই বন্ধ করেছেন। একটা মানুষ কতটুকু স্বার্থপর হলে এটা হতে পারে। জীবনে কেউ কষ্ট করে বড় হলেই ভালো মানুষ হয়ে যায় না আপু। আপনি যা করেছেন একদম ঠিক কাজ করেছেন। আপনি নিজের মায়ের সংসার বাঁচিয়েছেন। তাতে তো পিতার সাথে আপনার সম্পর্ক স্যাক্রিফাইস করতে হয় তো হোক। অন্তত আপনার মায়ের ঘর তো বেঁচে গিয়েছে, তাই না? ব্যাপারটিকে এভাবেই দেখুন…
আর আপু, আপনি নিজের প্রেমিকের সাথে সব শেয়ার করবেন। আরেকজনের দুঃখের কথা শুনলে নিজের দুঃখও কমে, কারণ মানুষ সহমর্মিতা দেখাবার সুযোগ পায়। আপনারা দুজনেই যেহেতু দুঃখী নিজের পরিবার নিয়ে, পরস্পরের দুঃখ শেয়ার করুন। পরস্পরকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরুন যেন কেউ আপ্নাদে আলাদা করতে না পারে। বড় যুদ্ধগুলো আপনারা করেই ফেলেছেন আপু। শেষপ্রান্তে এসে হাল ছাড়বেন না যেন। আপনি কেন রাগারাগি করে ফেলেন, সেটা প্রেমিককে বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন তিনিই আপনার মনকে সাহস দিয়েছেন।
অনেক শুভকামনা আপনাদের জন্য। যখন আপনারা দুজন মিষ্টি একটা সংসার বুনবেন, আমাদের জানাবেন নিশ্চয়ই। আমরা সেই সুখবরের অপেক্ষায় রইলাম।