মা/ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম, কিন্তু নিষ্ঠুর পৃথিবীর মানুষেরা আমাকে বাঁচতে দিল না। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তারেক, তারেকের মা ও তার বোন কনিকা। আমার মৃত্যুর প্রতিশোধ তোমরা নিও। চিঠিটি শারমিন আক্তার ওরফে মিনুর পরিবার তার শোয়ার কক্ষ থেকে উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার বিকেলে তার পরিবারের সদস্যরা চিঠিটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ নিজাম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
চিঠিটি পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে এসআই নিজাম উদ্দিন বলেন, চিঠিটি তার হাতের লেখা কিনা আমরা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। তার হাতের লেখা এবং অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। তবে চিঠিটি কখন লেখা হয়েছে তার সময় বা তারিখ উল্লেখ নেই।
গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের শাহ্রাস্তির ফরিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মিনুকে (১৫) তার সহপাঠী মোমিন হোসেন ওরফে তারেক শ্রেণিকক্ষ থেকে পুকুর পাড়ে ডেকে নেয়। সেখানে তারেক তাকে থাপ্পড় মারে ও তার মুখে থুথু ছিটায়। একই দিনে তারেকের মা রুপবান বানু ও বিদ্যালয়ে যেয়ে মিনুকে শাসান এবং অপমান করেন।
পরে মেয়েটি বিদ্যালয় থেকে বিরতির সময় ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যায়। বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে শোয়ার ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। এলাকাবাসী মৃত্যুর খবর শুনে হামলা চালিয়ে বিদ্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ ভাংচুর করেন। মিনুর ভাই সাহাবুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন তারেক ও তার মা বিদ্যালয়ে যেয়ে মিনুকে অপমান ও অপদস্থ করেন। মিনু বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে ঘটনাটি জানিয়েও প্রতিকার পায়নি। বিদ্যালয় থেকে এত বড় একটি ঘটনা আমাদের পরিবারের কাউকে জানানো হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিদ্দিকুর রহমান মিনুর পরিবার বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি আমাদের কাউকে ঘটনা জানায়নি। প্রধান শিক্ষক আরো জানান, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শনিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেছি। শনিবার বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলেছে।
এসআই নিজাম উদ্দিন জানান, মূল আসামী তারেক কারাগারে আছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে একমাত্র মেয়ে মিনুকে হারিয়ে তাঁর পরিবার বাকরুদ্ধ। বখাটের হাতে একটি ফুটফুটে মেয়ের অকাল মৃত্যুতে এলাকার মানুষ শোকাগ্রস্থ। আমরা এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন