মানুষের জন্য তৈরি এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হচ্ছে গবাদিপশুকে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে বিশ্বে যে পরিমাণ এন্টিবায়োটিক তৈরি হয় তার অর্ধেকই ব্যবহৃত হয় পশু উৎপাদনে।
আর মানুষের জন্য তা বয়ে আনছে ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকি।
আপনি ফাস্ট ফুড হিসেবে যে বার্গার খাচ্ছেন তার মাংস, জিভে জল আনা রেস্টুরেন্টের জুসি স্টেক অথবা ঘরে বসে রসিয়ে রসিয়ে যে গরুর মাংস খাচ্ছেন তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসে এভাবে উৎপাদিত প্রাণী থেকে।
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ভেবে যে দুধ খাচ্ছেন বা মাছ খাচ্ছেন তার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলছেন, বাংলাদেশে গবাদি পশু উৎপাদনে এন্টিবায়োটিক এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
তিনি বলছেন, “মানুষের জন্য তৈরি এন্টিবায়োটিকস খাওয়ানো হচ্ছে গবাদিপশুকে। যেসব কোম্পানি পশু খাদ্য তৈরি করে তারা তাতে মানুষের জন্য তৈরি এ্যন্টিবায়োটিকস মিশিয়ে দিচ্ছে। কারণ সেটি বেশি ভাল কাজ করে”
গরু, মুরগী, মাছের খাবার সবগুলোতেই এরকম ব্যবহার রয়েছে।
আবার প্রাণীদের জন্য যে এন্টিবায়োটিক তাও তাদের খাওয়ানো হচ্ছে।
পশু খাবার উৎপাদনকারীরা বলছে এতে গবাদি পশু সুস্থ থাকবে।
আর খামারিরা বিষয়টি না বুঝেই সেই খাবার কিনে খাওয়াচ্ছে।
আসলে এখানে ভুলটা হলো অসুখ হওয়ার আগে খাওয়ালে এন্টিবায়োটিক কোন কাজ করে না।
সেটি খাওয়াতে হয় সংক্রমণ হলে তার পরই।
অধ্যাপক ফারুক বলছেন, এর প্রধান ঝুঁকিটা হলো, কোন সংক্রমণ ছাড়া এত বেশি এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে পশুর শরীরে যে জীবাণু তা ধীরে ধীরে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি করে ফেলে।
তিনি বলছেন মানুষ যখন এভাবে উৎপাদিত গরু, মুরগী বা মাছ খায় তখন খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে এসব এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু প্রবেশ করে।
“এর পর মানুষ যখন তার নিজের অসুখ হলে সেসব এন্টিবায়োটিক খায় তখন সেই ঔষধে আর কাজ হয়না। এতে করে খুব সাধারণ অসুখেও মানুষ মারা যাবে”
তিনি এটিকে নীরব একটি মহামারি বলে উল্লেখ করলেন।
গবাদিপশুর শরীরে যখন জীবাণু এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে ওঠে তখন ঐ পশুর বিষ্ঠা, মলমুত্র পরিবেশে মিশে যাচ্ছে।
তাতে প্রকৃতিতেও মিশে যাচ্ছে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু।
আজ ভোক্তা অধিকার দিবসে খাবার মেনু থেকে এমন খাবারকে বিতাড়িত করার প্রচার চালানো হবে বিশ্বজুড়ে।
মানবদেহের এন্টিবায়োটিক পশুকে না খাওয়ার ব্যাপারে প্রচার হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন