বিশ্বের ১৫৭টি দেশে অবস্থানকারী এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কমিশন সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কমিশনের নিয়মিত সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালককে বিষয়টি পরবর্তী কমিশন বৈঠকে জরুরী ভিত্তিতে উপস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যপত্র উপস্থাপন ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ইসি দীর্ঘ দিন ধরে প্রবাসে অবস্থিত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠনের দাবির পর প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এছাড়া বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর অনুরোধে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে এ সংক্রান্ত ফাইলটিতে ইসির উপ-সচিব মু. আবদুল ওদুদ লিখেছেন, শুধু আইন সংশোধন করেই বিদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের বিষয়টি নিষ্পন্ন করা যাবে না। বিদেশে এনআইডি ইস্যু করতে কী ধরনের সাপোর্ট লাগবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়া তিনি এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
জানা যায়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জাতীয় প্রবৃদ্ধির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার। এটি আমাদের জাতীয় বাজেটের প্রায় অর্ধেকের সমান।
নাগরিক হিসেবে প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখলেও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাদের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক অধিকার ‘ভোটাধিকার’ প্রয়োগ করতে পারছেন না। পাশাপাশি দেশের নাগরিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বিডি টুযেন্টিফোর লাইভকে বলেন, এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা আমার কছে এসেছে আমি সবকিছু প্রস্তুত করে আগামী কমিশন বৈঠকে উপস্থাপন করব। তাছাড়া আমি বিদেশে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ভোটার করে তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা আগেই বলেছিলাম।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে দেশের উচ্চ আদালত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার সংবিধান স্বীকৃত বলে ঘোষণা দিলেও দীর্ঘ ১৭ বছরে তাদের সে অধিকার বাস্তবায়ন করা হয়নি।
বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ‘অ্যাবসেন্টি ব্যালট সিস্টেম’ চালু আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া হংকং, থাইল্যান্ড, কনাডাসহ বিশ্বের প্রায় ৫০ দেশের নাগরিকরা স্ক্যানিং ভোটিং সিস্টেমের মাধ্যেমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকেই ভোট দিতে পারেন। বাংলাদেশি প্রবাসীরা ভোটার হলে স্ক্যানিং ভোটিং সিস্টেম পদ্ধতি শুরু করা সম্ভব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন